পরাশক্তি ফ্রান্সকে হারানো কি আদৌ সম্ভব?

 


ফ্রান্স এমন একটি দেশ, যার সামরিক সক্ষমতা আকাশ চুম্বী। ICBM, নিউক্লিয়ার ওয়েপনস সহ এমন কিছু বাদ দেই যা তাদের সামরিক বহরে নেই। আধুনিক সামরিক সরঞ্জাম সহ তারা এখন ৫ম প্রজন্মের স্টিলথ ফাইটার জেট সামরিক বহরে যুক্ত করার চেষ্টা করছে। বিশ্ববিখ্যাত রাফালে ফাইটার জেট ফ্রান্সে নির্মিত হয়। কিন্তু এই ফ্রান্সের যুদ্ধের ইতিহাস বড়ই করুন।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিটলার সর্বপ্রথম ফ্রান্সে আক্রমণ করে ফ্রান্সকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দেয়। ব্যটেল অফ ফ্রান্স এর ঘটনা সবাই জানে। হিটলারের অপারেশন ডায়নামো নামের অভিযানে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মিত্রবাহিনীর মোট ৩৪ লাখ সেনা পলায়ন করেছিলো।  ভিয়েতনাম যুদ্ধে চরম মূল্য দিয়ে বিদায় নেয় ফ্রান্স। আলজেরিয়ার সাথে ৭ বছরের চলমান যুদ্ধে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে বিদায় নেয় ফ্রান্স। ইতিহাসের সবচেয়ে জঘন্য গণহত্যা আলজেরিয়ায় চালিয়েছিলো ফ্রান্স। মোট ১৫ লাখ মানুষকে হত্যা করে তারা। কিন্তু আজজেরিয় দের প্রচন্ড আক্রমণের মুখে ফিরে আসে তারা। এরপর ন্যাটোর সদস্য হওয়ার পর বসনিয়ার যুদ্ধে ফ্রান্সের একটি ইউনিট যায় যুদ্ধ করতে এবং চরম মাইর খায়ে ফিরে আসে।

সব শেষে একটাই কথা, ফ্রান্স যত শক্তিশালীই হোক না কেন। তাদের যুদ্ধ জয়ের ইতিহাস খুব লজ্জাজনক। সেক্ষেত্রে ভারত-ফ্রান্স বন্ধু রাষ্ট্র। শক্তিশালী হওয়ার পরেও খালি মাইর খায়। খালি মাইর খায়।


আর বর্তমানে ফ্রান্সের সাথে যুদ্ধের কৌশলগত দিক দিয়ে শত্রু জোট অনেকটাই জয় লাভ করবে। ফ্রান্সের আয়তন ৬, ৪০, ৮০১ ব.কি.মি। যা বিশ্বে ৪৮ তম। মেট্রোপলিটন ফ্রান্সের আয়তন সাড়ে ৫ লক্ষের মতো। যা অনেকটাই ছোট। একটি বিশাল ক্ষমতাধর রাষ্ট্রের জন্য আয়তন অনেক বড় একটি ব্যাপার। এটা যুদ্ধে জেতার একটা গুরুত্বপূর্ণ শর্তগুলোর একটি। যেমন ভারত সীমান্ত গুলোতে যতই মাইর খাক, ফুল স্কেল যুদ্ধে ভারতকে হারানো অসম্ভব। সেটা আমেরিকা বা, রাশিয়া আক্রমণ করলেও ভারত হারবে না। অপর দিকে বাংলাদেশ নেপালের চেয়ে অনেক শক্তিশালী। কিন্তু আয়তন কম হওয়ায় শত্রুজোটের কাছে হেরে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।  ফ্রান্সের ট্যাংক বহরও দুর্বল।  তাদের বহরে মাত্র ৪শ থেকে ৫শ ট্যাংক আছে। যেখানে তুরষ্কেরই আছে ৩ হাজারের উপরে। আর পরাশক্তি ফ্রান্সের আছে মাত্র ৪-৫ শত। স্থলভাগ রক্ষায় ট্যাংকের ভূমিকা অনস্বীকার্য। 

আরো একটা ব্যাপার হচ্ছে ফ্রান্সের পূর্বে ভূম্যধ্য সাগর আর পশ্চিমে আটলান্টিক মহাসাগর। মানে দুই দিক দিয়েই শত্রু পক্ষ নৌবহর নিয়ে বসে থাকলে কিছুই করার থাকবে না ফ্রান্সের। তাই খালি শক্তিশালী সামরিক সরঞ্জাম থাকলেই যুদ্ধে জেতা যায় না। আর ফ্রান্স তো আগে থেকেই পরাশক্তি ছিলো। কিন্তু দাড়াতে পারেনি কারোর সামনেই। জার্মানি, ইন্দোচীন, আলজেরিয়া, বসনিয়া - কারোর সাথেই ফ্রান্সের জয়ের নজির নেই। কারন যুদ্ধ পরিচালনা করতে হয় কৌশল দিয়ে, সামরিক সরঞ্জাম দিয়ে না। ব্রিটেন-আমেরিকার সমর্থন পেয়েও ফ্রান্সের লজ্জাজনক আত্মসমর্পণই প্রমাণ করে তারা পরাশক্তি হয়েও যুদ্ধে আদতে কতটা পারদর্শী।......

Comments

Popular posts from this blog

Nest js

Malware Analysis

Internet Computer (ICP) - Blockchain