কারুন লেক
মিশরের Faiyum Governorate নামক শহরে ঐতিহাসিক কারুন লেক অবস্থিত। মুসা (আ.) এর চাচাত ভাই কারুনের নামানুসারে এই লেকের নাম হয় কারুন লেক। অভিশপ্ত কারুন আল্লাহর গযবে পতিত হয়। সে জীবন্ত অবস্থায় মাটির গভীরে চলে যায়। মানে মাটি তাকে জীবন্ত অবস্থায় গ্রাস করে নেয়।
অত্যন্ত ধনী ছিলো এই কারুন। প্রচুর ধন-সম্পদ থাকার পরেও সেই সম্পদ হতে সে গরীবের হক্ব আদায় করতো না। মানে যাকাত দিতো না। মহান আল্লাহর নির্দেশে মুসা (আ.) তার নিকট যাকাতের দাওয়াত নিয়ে গেলেও কারুন অহংকারের সাথে তা প্রত্যাখ্যান করে। মুসা (আ.) তার বিরোধিতা করায় কারুন এতটাই উগ্র হয়ে উঠে যে অনেক ভাবে সে সীমালঙ্ঘন করতে থাকে। সে দুশ্চরিত্রা মেয়েকে মুসা (আ.) এর বিরুদ্ধে অপপ্রচার রটাতে রাজার নিকট পাঠায়, কিন্তু আল্লাহর অসীম কুদরতে সেই মেয়ে রাজার সামনে গিয়ে মিথ্যা অপপ্রচারের পরিবর্তে কারুনের সব অপকর্মের কথা বলে দেয়।
সব শেষে কারুন বিভিন্ন ধনী ব্যাক্তিদের নিয়ে হযরত মুসা (আ.) এর বিরুদ্ধে দল গঠন করতে থাকে। তার কৃতকর্মে আল্লাহ এতটাই ক্ষুব্ধ হন যে মুসা (আ.) কে বলেন "হে মুসা জমিনকে আমি তোমার অধীনস্হ করে দিলাম। অতএব তুমি যা নির্দেশ দিবে তাই করবে।" --
এরপর, মুসা (আ.) কারুন কে শেষবারের মত যাকাতের কথা বললে সে সেটা প্রত্যাখ্যান করে। আর তাই, মুসা (আ) মাটিকে নির্দেশ দেয় কারুন কে গ্রাস করতে। তখন মরুভূমির মাটি কারুনকে গ্রাস করতে থাকে। যা দেখে কারুনের সহযোগীরা ভয়ে মুসা (আ.) এর আহ্বান মেনে নেয়। কারুন তখনও প্রত্যাখ্যান করছিলো। শেষ পর্যন্ত যখন গলা পর্যন্ত কারুনের দেহ মাটি গ্রাস করে নিলে কারুন মুসা (আ.) এর আহ্বান স্বীকার করে নেয়। কিন্তু, ততক্ষনে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল। ফলে আল্লাহর গযবে পতিত হয়ে কারুন ধ্বংস হয়ে যায়। আর এর কিছুক্ষন পর কারুনের ঘরবাড়ি সহ যাবতীয় সম্পদ একটি বিকট শব্দের মাধ্যমে ভেঙে মাটির সাথে মিশে যায়। আর যে জায়গায় কারুনকে মাটি গ্রাস করে নিয়েছিল, সে জায়গায় একটি লেকের জন্ম হয়। লেকটি অত্যন্ত দুর্গন্ধময়। অথচ এর পানি কিন্তু খুব স্বচ্ছ ও পরিষ্কার। কিন্তু অত্যন্ত দুর্গন্ধময়। কয়েক কি.মি দূর থেকেই এই লেকের দুর্গন্ধ পাওয়া যায়। এই লেকিটির দুর্গন্ধ আল্লাহর গযবের নিদর্শন বহন করে।
অতএব, যাদের উপর যাকাত ফরয, তারা অবশ্যই যাকাত আদায় করুন। নেসাব পরিমাণ মালের মালিক হয়েছেন অর্থাৎ সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ, বা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপা,কিংবা সমপরিমাণ মূল্যের নগদ টাকা বা ব্যবসার মালের মালিক হলে আপনার উপর যাকাত ফরয। তখন যাকাত আদায় করতে হবে। অতএব, যাদের উপর যাকাত ফরয, তারা যাকাত আদায় করুন।
বারাকাল্লাহ ফি কুম।
Comments
Post a Comment