নচ্ছার হেফাজত!
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে আগমকে দেশের সর্বস্তরের জনগণ মেনে নিতে পারেনি। তাই গত ২৬শে মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসে জুম্মার নামাযের পর কঠোর আন্দোলন হয় যার নেতৃত্বে ছিলো হেফাজতে ইসলাম। যার পরিপ্রেক্ষিতে অনেক মানুষ প্রাণ হারায়। তাদের মাঝে আলেমের সংখ্যা বেশি। যার ফলশ্রুতিতে ১ দিনের হরতালও ডাকে তারা। সেই সময়ের পর থেকে সরকার ও হেফাজতে ইসলাম দুইজন দুই মেরুতে অবস্থান করছে। এর কিছুদিন পর হেফাজতে ইসলামের অত্যন্ত জনপ্রিয় নেতা মামুনুল হক সাহেবের সাথে এক বিশাল ঘটনা ঘটে যায়। সোনার গাঁ হোটেলে তার দ্বিতীয় স্ত্রীর সাথে পাকড়াও করে সরকার দলীয় নেতাকর্মীরা। যা নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক। কেউ কেউ বলে এটা নাকি হানিট্র্যাপ আবার কেউ বলে এটা তার দ্বিতীয় বউ। আসল ব্যাপার নিজেই পরিষ্কার করে মামুনুল হক। তিনি বলেন এটা তারই দ্বিতীয় বউ। সব মিলিয়ে মামুনুল হক সাহেবকে নিয়ে এক প্রকার অস্বস্তিতে পড়ে হেফাজতে ইসলাম।
দেখা যাচ্ছে অনেক দেশীয় ইসলামিক সংস্থা তার উপর ভালোই ক্ষেপেছে। অনেকে তাকে ভালোই ব্লেম দিচ্ছে, কেন তিনি এমন করলেন। আবার ইসলামে চার বিয়ে করা জায়েজ। এটা সুন্নত। কিন্তু দেশীয় মিডিয়ার বিভিন্ন প্রচারে জনগণের কাছেই ব্যাপারটা ক্লিয়ার না যে উনি মামুনুল হকের স্ত্রী না শয্যা সঙ্গী। আলেম মামুনুল হক নিজে বলেছেন তার কাছে প্রমাণ আছে তিনি যে বৈধ ভাবে বিয়ে করেছেন। কিন্তু এটাই মানতে নারাজ অনেকে।
এক মামুনুল হকের ঘটনার পর এখন সব ঠান্ডা। সব চুপ। এদিকে মাদ্রাসায় কিছু বিকৃত মনমানসিকতা সম্পন্ন হুজুর তার ছাত্রদের সাথে যে বিকৃত যৌন সম্পর্ক করেন সেটা প্রায়শই মিডিয়ায় দেখি। কিন্তু এবার সেই হুজুরদেরই একজনকে মিডিয়া বলছে যে সে নাকি হেফাজত নেতা। বলাৎকারি পুরুষ হেফাজত নেতা। মিডিয়া বলছে আরকি। অবাক হলাম দেখে। হঠাৎ হেফাজতে ইসলাম থেকে এতো অপরাধী বেড় হচ্ছে! এতোদিন তো দেখিনাই। হঠাৎ এখনই কেন হচ্ছে?
আসলে হেফাজতে ইসলামের সরকারের বিরুদ্ধে গিয়ে আন্দোলন করা উচিত হয় নি। দেশ ডেমোক্রেটিক হলেও জনগণের আন্দোলন করার অধিকার নেই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও দেখেছিলাম আন্দোলন হয়েছিলো। মিডিয়া প্রচার করেছিলো দেখেছিলাম। দেশের জনগণ মতামত প্রকাশ করলেও সেটা কত তাড়াতাড়ি গ্রাহ্য হবে সেটাই জানার বিষয়। সরকারে সাথে দ্বিমত পোষন করে আন্দোলন করার জন্য আজ চারিদিকে হেফাজতের বিভিন্ন দোষ বেরোচ্ছে। আগেও হেফাজত ছিলো। কিন্তু দোষ ছিলো না। এবারও হেফাজত আছে, সাথে বিভিন্ন দোষ আবিষ্কার হচ্ছে। আমি হেফাজত করি না। কিন্তু আমি অপরাধ করলে আমিও হেফাজত কর্মী হয়ে যেতে পারি। অসম্ভব কিছু না।
আর আরেকটা কথা বলি, এটা সবারই ক্লিয়ার হওয়া উচিত। সরকার কিন্তু নরেন্দ্র মোদিকে ইনভাইট করে নাই। সে নিজ থেকে আসছে। তার নির্বাচনের ফায়দা নেয়ার জন্য। মনে আছে? ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শংকর এসেছিলো দেশে নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ ভ্রমণ কে নিশ্চিত করতে। ভিডিও কনফারেন্স করেছিলো দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী! এখন এটা কি সম্ভব? যে কোন দেশের রাষ্ট্র প্রধান দেশে আসতে চাচ্ছে আর তাকে না করে দেয়া হয়েছে। না করে দিলে কিন্তু ধরতে গেলে আন্তর্জাতিক ভাবেও চাপে পড়ার সম্ভাবনা ছিলো দেশের। তাই এটায় সরকারের দোষ আছে কিনা জানি না। আমি মুখ্যুসুখ্যু মানুষ, আমার কাছে মনে হচ্ছে দোষ সরকারের খুব একটা নেই।
সব শেষে বলবো, একটা নিরপেক্ষ আলোচনা করলাম। স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে এই অধিকারটুকু আমার আছে আশা করি। নিরপেক্ষতায় অপরাধ খুঁজে পেলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। আর ফিনিশিংটা সরকারের পক্ষেই দিসি কিন্তু। তাই দয়া করে অপরাধ হিসেবে না নিয়ে আলোচনা হিসেবে নিবেন। ইদানিং নিরপেক্ষ আলোচনা করতেও ভয় হয়। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একজনের প্রাণ গিয়েছে তো, তাই।
Comments
Post a Comment