হানাফি হানাফী মাযহাবের সনদ
লেখাটা সংগৃহীত।
হানাফি হানাফী মাযহাবের সনদ
হানাফি মাযহযহাবের শ্রেষ্ঠত্ব বিস্তৃতি
মাকামে ইমাম আবি আবু হানিফা
দেশে দেশে দিকে দিকে যুগে যুগে হানাফি মাযহাব
বিশ্বময় জগৎময় হানাফী মাঝহাব মাজহাব
বিশ্বজুড়ে পৃথিবিজুড়ে জগৎজুড়ে দুনিয়াজুড়ে ফিকহে হানাফিয়া
আরব বিশ্বে পুরো আরবে গোটা দুনিয়ায় সারা বিশ্বে সমস্ত পৃথিবীতে হানাফী মাজহাব
স্বর্ন্যুগে পৃথিময় হানাফি মাযহাবের মাঝহাবের মাজহাবের রাজত্ব
♦ইমাম আবু হানিফা রহ. কি তাবিঈ ছিলেন ? ফিকহে হানাফীর কি সনদ নেই ? কেন এ অপপ্রচার ?♦♦
********কিছুদিন আগে হানাফী মাযহাবের
বিরুদ্ধে লেখা একটা কিতাব নিয়ে পোস্ট দিয়েছিলাম।
কিতাবটির নামঃ হানাফী ফিকহের ইতিহাস ওপরিচয়।
লেখকঃ মুফতী মাওলানা আব্দুর রউফ।
এটিকে হানাফী মাযহাবের
বিরুদ্ধে বিশাল অস্ত্র হিসেবে ব্যাবহার করে আসছে।
মুফতী মাওলানা আব্দুর রউফ সাহেবের এলেমের দৌড়
কতটুকু।
এবার তাদের অভিযোগ গুলোর
মধ্যে আজকে একটিনিয়ে আলোচনা করবো ইনশাআল্লাহ্।তাহলে এবার একত্রে অভিযোগ গুলো দেখিঃ
.
(১) ইমাম আবু হানীফা রাহঃ এর কথা দিয়ে বরাত
দেওয়া হয়েছে কিন্তু তার কথার কোন সনদ দেওয়া হয়
নি। যদিও ফতোয়ার কিতাব গুলো লেখা হয়েছে ইমাম আবু
হানীফা রাহঃ এর মৃত্যুর কয়েকশ বছর পরে।
(২) এ কারনে ইমাম আবু হানীফা রাহঃ এর কথাগুলোর
কোন সূত্র নেই।
(৩) এ কারনে ফতোয়ার কিতাব গুলোতে লেখকদের
মতামত যে ইমাম আবু হানীফা রাহঃ এর তার কোন
ভিত্তি নেই।
.
Ans:-
মূল জবাবে যাওয়ার আগে জেনে নেওয়া দরকার
হানাফী মাযহাবের মূল উৎস গুলো কি কি?
হানাফি মাযহাব কি আল মুগনী,হিদায়া,রাদ্দুল
মুহতার,বিকায়া…… দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে? অবশ্যই না।
★হানাফী মাযহাবের মূল বণনাকারী :-
**ইমাম আবু ইউসুফ ,
**ইমাম মুহাম্মদা রহ. ,
**ইবনে আবি শাইবা ।
তারা সরাসরি ইমাম আবু হানিফার ছাত্র তাদের নিজের হাতে লেখা কিতাব
রয়েছে। ব্যাস এটা সবচেয়ে বড় দলিল। এসব কিতাবেই
ইমাম আবু হানীফা রাহঃ এর উক্তি গুলো সন্নিবেশিত
হয়েছে। এখান থেকেই অন্য অন্য কিতাব গুলোতে ইমাম
আবু হানীফা রাহঃ এর উক্তি পেশ করা হয়েছে।
.
★সবচেয়ে বড় কথা হলো:
**ইমাম আবু ইউসুফ রহ.
**খলিফা হাদী,
**মাহদী ও
**হারুনুর রশিদের
.
যামানা থেকে সমগ্র মুসলিম বিশ্বের প্রধান
বিচারপতি ছিলেন তখন, হানাফী মাযাহেরব
মাসআলা গুলোর আলোকে বিচার সহ সকল কার্যক্রম
চলেছে আর এটি একজনের সনদ থেকে হাজার গুন
শক্তিশালী। আব্বাসী খিলাফত, উসমানী খিলাফত দু’টোই
হানাফী ফিকহ অনুযায়ী চলেছে।
.
★ইবনে হাজার আসকালানি রাহ. বলেন- “উল্লেখ্য
যে, আব্বাসী যুগের প্রায় পাঁচশ বছর পর্যন্ত পবিত্র
মক্কা-মদীনার সকল ইমাম ও বিচারক হানাফী ছিলেন।
অতঃপর প্রায় দু’শ বছর খাওয়ারিয্মী ও সালজুক্বীদের
অধীনে চলে, তারাও রক্ষণশীল হানাফী ছিলেন। অতঃপর
উসমানী ওতুর্কী খেলাফত প্রায় পাঁচশ বছর পর্যন্ত
চলে। তারাও সবাই হানাফী ছিলেন।” ( আল-
খাইরাতুলহিসান-ইবনে হাজার, মক্কী শাফেয়ীঃ পৃ –৭২ )
★“মোটকথা, ইসলামী ইতিহাসের
সোনালী অধ্যায়ে বারশ বছর পর্যন্ত পবিত্র মক্কা-
মদীনায় ইমাম ও খতীবের সুমহান দায়িত্ব
হানাফী ইমামগণই আঞ্জাম দিয়ে এসেছেন এবং কাযী ও
বিচারকের আসনেও তারাই ছিলেন।” ( আল-
খাইরাতুলহিসান-ইবনে হাজার মক্কী, শাফেয়ীঃ পৃ – ৭২;
রদ্দুলমুহতারঃ পৃ – ১/৭৫ )।
.
★হানাফী মাযহাবের মূল হলো যাহেরী রিওয়াত।
যাহেরী রেওয়াত বলা হয়,ইমাম মুহাম্মাদ রহ. এর
.
৬ টি কিতাবকে -
১. সিয়ারে কাবীর
২. সিয়ারে সগীর
১. জামে সগীর
২. জামে কাবীর
৪. মাবসুত
৬. যিয়াদাত
.
★ইমাম মুহাম্মাদ রহ. ইমাম আবু হানিফার খাস
ছাত্র। এগুলোই হানাফী ফিকহের মূলউৎস। আর
এগুলো থেকেই পরবর্তিতে বিভিন্ন ফতোয়ার
কিতাবে ইমাম আবু হানীফা রাহঃ এর কথাকে কোট
করা হয়েছে।
.
★ইমাম ত্বহাবী রহ. (২২৯-৩২১ হি:) শরহু
মায়ানিল আসার বয়ানু মুশকিলিল আসার লিখেছেন।
এগুলো সব হানাফী মাযহাবের মাসআলা বর্ণনা করা হয়েছে।
এভাবে প্রত্যেক যুগে হানাফী আলেমগণের তালিকা আছে।
এগুলোত্বাবাকাতে হানাফিয়্যা নামের
বইগুলোতে পাওয়া যাবে।ইমাম সারাখসী, ইমাম বাযদাবী,
আবুল লাইস সমরকন্দী……এনারা সবাই অনেক আগের।
এরা হানাফী মাযহাবের মাসয়ালাগুলো সন্নিবেশিত
করেছেন। এভাবেইহানাফী ফিকহ অন্য সকল কিছু
থেকে শক্তিশালী সনদে সংরক্ষিত হয়েছে।
.
★এবার মুফতি সাহেবের অভিযোগ গুলো খণ্ডন
করা যাক।
.
(১) (২)(৩) নম্বর অভিযোগের উত্তর:-
**আরে ভাই, ফিকহের কিতাবগুলো লম্বাচূড়া সনদ
বর্ণনা করা হয়না এটা মুফতি আব্দুর রউফ সাহেবের ও
জানা থাকার কথা। সনদের জন্য অন্যান্য কিতাব রচিত
হয়/হয়েছে যে গুলোর উদ্যেশ্যই হল সনদ সংকলন করা।
আচ্ছা, কওল বর্ণনা করেই যদি পুরা সনদ
বর্ণনা করা জরুরি হয়ে থাকে তাহলে মেশকাত শরিফের
ব্যাপারে তারা আপত্তি কেন তোলে না?
.
**মিশকাতের হাদীস
বা আছার বর্ণনা করে বলা হয়েছে এটা ইমাম বুখারী রাহ
বর্ণনা করেছে এটা ইমাম বাইহাকী রাহঃ বর্ণনা করেছেন,
এটা ইমাম মুসলিম রাহঃ বর্ণনা করেছেন।
কিন্তু এই সকল ইমাম থেকে মেশকাতের মুসান্নাফের লেখক হাম্মাদ বিন
আব্দুল্লাহ আলখতীব আত তিবরিযী(৭৪১
হি:) পর্যন্ত কোন সনদ উল্যেখ নেই। কিন্তু এর
সামনে সেই সনদ অবশ্যই ছিলো। যদিও তিনি তা উল্যেখ
করা যরুরী মনে করেন নি।
.
**কারন যদিও ইমাম বোখারী রহ. ২৫৬ হি: তে মৃত্যু বরণ করেছন তারপর ও
তার কিতাব রয়েছে ব্যাস এটি বড় দলিল। এখন যদি কোন
আহাম্মক এই আপত্তি তোলে যে “মেশকাতে হাদীস
গুলোর সনদ উল্যেখ নেই শুধু বলা হয়েছে এটা ইমাম
বুখারী রাহ বর্ণনা করেছেন, কিন্তু ইমাম বুখারী থেকে
শেষ পর্যন্ত কোন সনদ নেই । তাই……।”
তাকে আপনি কি জবাব দিবেন?
.
**আমাদের ও এই কুদুরী ,
হিদায়া, রাদ্দুল মোহতারের ক্ষেত্রে একই জবাব।
যদিও ইমাম আবু হানিফা ১৫০ হি: তে মৃত্যু বরণ করেছেন
তারপরও তার কথাগুলো তার ছাত্রদের কিতাবে রয়েছে ,
ব্যাস এটি বড় দলিল।
বাদ দিলাম মেশকাতের কথা।
.
**ইবনে হাজর আসকালানি রাহঃ এর """তাকরীবুত তাহযীব"" রিজাল
সাস্ত্রের বিখ্যাত কিতাব। এখানে ইবনে হাজার
আসকালানি রাহঃ ৬০০,৫০০,৪০০,৩০০… বছর
আগের রাবিদের ব্যাপারে মন্তব্য করেছেন। কিন্তু
কোনো ধরনের সনদ উল্যেখ করেন নি। এখন যদি কোন
জাহেল, মুফতি সাহেবের মত এই
কথা বলে যে –
.
**“ইবনে হাজার অমক রাবির মৃত্যুর ৩৯০ বছর পর
জন্মগ্রহন করে কিভাবে তার ব্যাপারে মন্ত্যব্য
করেছে তার কোন সূত্র নাই। অতএব সূত্র বিহীন
কারো কথা গ্রহন করা জায়েজ নাই ”
তাকে আপনি কি বলবেন?
.
**মূল ব্যাপার হল ইবনে হাজার
আসকালানি রাহঃ এর সামনে রাবির ব্যাপারে মন্তব্যের
সনদ ছিলো কিন্তু এ তিনি তা উল্লেখ করার জরুরত
মনে করেন নি। ঠিক একই ঘটনা কুদুরী, হিদায়া ,রাদ্দুল
মুহতারের… ক্ষেত্রে। এগুলোর লেখকদের সামনে ইমাম
আবু হানীফা রাহঃ এর কথার সনদ ছিলো যা ইমাম আবু
হানীফা রাহঃ এর ছাত্র ইমাম মুহাম্মদ, ইমাম
ইউসুফ,ইমাম ইবনে আবি শাইবার কিতাবে আছে কিন্তু
তারা এর সনদ ফতোয়ার কিতাবে উল্লেখ
করা জরুরী মনে করেননি। ঠিক যেমন মেশকাতের লেখক
যে কারনে জরুরী মনে করেন নি।
Comments
Post a Comment