মুসলিম হয়েও ইজরায়েলের পক্ষে থাকা মানুষের মুখে থুতু নিক্ষেপ করলে আহলুল হাদিসদের গা জ্বলে কেন?

 

শুরুতে একটা কথা বলি, আমি কোন ফেতনা বা বিষদগারের পক্ষে না। আমি কোন দল বা মতের বিরুদ্ধে না। আমি আমার মতামত প্রকাশ করছি। আমি সম্পূর্ন ফেতনার বিরুদ্ধে। একটা বিষয় নিয়ে খটকা লাগলো, তাই লিখতে বসেছি! মনে আঘাত লাগলে ক্ষমা প্রার্থী। ভুল হলে শুধরে দিবেন।

বিষয় হচ্ছে, কিছুদিন আগে দেখলাম আবু ত্বহা আদনান হুজুর কারো নাম বা দল উল্লেখ না করে কিছু মানুষের উদ্দেশ্যে বলেছেন যে "তুমি যে মানহাজের উপর বসে ইজরায়েলকে সমর্থন করো...... মানহাজের মুখে আমি থুতু নিক্ষেপ করি!"

উনি বলেছেন যে মানহাজে থেকে ইজরায়েলকে সমর্থন করো... উনি কিন্তু কারা এই মানহাজে, বা কোন দলের মানহাজ এটা উল্লেখ করেন নাই। উনি জাস্ট বলেছেন "..... যে মানহাজের থেকে ইজরায়েলকে সমর্থন .....!" এখন এই কথা বলার পর সরাসরি আহলুল হাদিসের অনেক সম্মানিত শায়েখ দেখলাম মারাত্মক খেপে গিয়েছেন। আবু ত্বহা আদনান হুজুরের মুখে মুতে দিচ্ছেন অনেকে। অনেকে দেখলাম ইনিয়ে বিনিয়ে রিপ্লাই করছেন। কেন তারা সঠিক! ইত্যাদি ইত্যাদি।

আমার প্রশ্ন... উনাদের গায়ে লাগলো কেন? উনারা যদি ইজরায়েলের পক্ষে না ই থাকবেন তাহলে উনাদের গায়ে লাগার তো কোন কারনই নাই! তাই না?

আমার একটা কথা! এই ফেতনাবাজি আল্লাহর ওয়াস্তে বন্ধ করা উচিত। আবু ত্বহা হুজুর কিন্তু খারাপ কিছু বলেননি। আবার উনি কিন্তু কারো নামও উল্লেখ করেন নি। তাহলে তাদের জ্বলে কেন আমি বুঝি না। উনারা আলেম। আলেম উলামার সম্মান ইসলামে অন্যতম। আর আলেম উলামার বিরুদ্ধে সরাসরি বিষদগার করাও অনুচিত। আর গীবত কিন্তু কবীরা গুণাহ। সরাসরি হারাম। এখন আহলুল হাদিস মাজহাব অনুসরন করে একজন ইসলামিক দাঈ এর মুখে মুত্র বিসর্জন করার কথা বলা, তাও আবার ওয়াজ মাহফিলের চেয়ারে বসে। এই ধরনের আচরণ কি আদতে কি দাওয়াত না ফেতনা? আমরা যারা সাধারণ মুসল্লি আছি, তারা কি শিখবো?

এমনিতেই উনারা দেখি একেকবার একেক কথা বলেন। একবার বলেন দেখি আমরা যারা মাজহাব মানি, তারা নাকি বেদাতি, তারা নাকি জাহান্নামী! আবার বলেন, না মাজহাব মানা যাবে। তাহলে এই ধরনের বিভ্রান্তি কেন? হানাফি মাজহাবের এই আক্বীদা ভুল, ঐ আক্বীদা ভুল, তারা বেদাতি! আরে ভাই, ভুল যখন শুধরে দিন। ফেতনা কেন? গীবত কেন?

এতোই যখন হক্ব পন্থী, তবে এটা জানেন না? মহান আল্লাহ পাক পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করে বলেছেন, ‘ফেতনা (দাঙ্গা, বিশৃঙ্খলা ও গৃহযুদ্ধ) হত্যা অপেক্ষা গুরুতর পাপ।’ (সুরা বাকারা : ১৯১)

একটা কথা মনে রাখবেন... বিশেষত জীবন ব্যাবস্থার ব্যাখ্যা পেতে তথা নন ইসলামিক লাইনে যারা আছে, তারা যারা ইসলামিক জীবন ব্যাবস্থার সঠিক ব্যাখ্যা পেতে মাজহাম অনুসরণ করেন, তাদের বলি... আহলুল হাদিস মানে হচ্ছে "হাদিসের বেত্তা'। যিনি হাদিস বিসারদ, হাদিসকে নিজের মাঝে ধারণ করেন, হাদিস মানেন তাদের বলা হয় আহলে হাদিস। আর যারা কোরআন হাদিসের আলোকে জীবন ব্যাবস্থা গড়ে তুলেছেন তাদের বলা হয় আহলুল সুন্নাহ ওয়াল জামাত। আমরা যারা হানফি মাজহাব বা অন্য মাজহাবও আহলুল সুন্নাহ ওয়াল জামাত হবেন, যদি তারা ভুল গুলো বাদ দিয়ে সঠিক ভাবে মানেন।

ভাই, সব হাদিস তো আপনি মানতে পারবেন না। আপনার জন্য প্রযোজ্য না। আবার জায়েজও হবে না। এখন কেন হবে না এই নিয়ে প্রশ থাকলে লিখুন, আমি পরবর্তীতে সময় বেড় করে ইনশাল্লাহ আর্টিকেল লিখবো বা কমেন্টের রিপ্লায়ে লিখে দিবো ইনশাল্লাহ।

যাইহোক, তাদের এই কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে মৌন প্রতিবাদ করলাম। কোন দল মতের বিরুদ্ধে গেলে ক্ষমাপ্রার্থী! তবে এই ফেতনার বিরুদ্ধে আপনারা সরাসরি কিছু না পারলেও অন্তত মনেপ্রাণে ঘৃণা করুন।

হযরত হুযাইফা (রাঃ) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, মানুষের হৃদয়ে চাটাইয়ের পাতা (বা ছিলকার) মত একটির পর একটি করে ক্রমান্বয়ে ফিতনা প্রাদুর্ভূত হবে। সুতরাং যে হৃদয়ে সে ফিতনা সঞ্চারিত হবে সে হৃদয়ে একটি কালো দাগ পড়ে যাবে এবং যে হৃদয় তার নিন্দা ও প্রতিবাদ করবে সে হৃদয়ে একটি সাদা দাগ অঙ্কিত হবে। পরিশেষে (সকল মানুষের) হৃদয়গুলি দুই শ্রেণীর হৃদয়ে পরিণত হবে। প্রথম শ্রেণীর হৃদয় হবে মসৃণ পাথরের ন্যায় সাদা; এমন হৃদয় আকাশ-পৃথিবী অবশিষ্ট থাকা অবধি-কাল পর্যন্ত কোন ফিতনা দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। আর দ্বিতীয় শ্রেণীর হৃদয় হবে উবুড় করা কলসীর মত ছাই রঙের; এমন হৃদয় তার সঞ্চারিত ধারণা ছাড়া কোন ভালোকে ভালো বলে জানবে না এবং মন্দকে মন্দ মনে করবে না (তার প্রতিবাদও করবে না)। (সহীহ মুসলিম - ৩৮৬)।

আমরা ফেতনার বিরুদ্ধে থাকবো। সরাসরি প্রতিবাদ করতে না পারি বা ফ্যাসাদ সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে পরিহার করি। কিন্তু মনেপ্রাণে ফেতনার বিরুদ্ধে থাকি।

লেখাটি সম্পূর্ন অরাজনৈতিক লেখা। রাজনীতি নামক ক্যালকুলাস আমার মাথায় ঢুকে না। আমি অংকে বড্ড কাচা।

Comments

Popular posts from this blog

Nest js

Malware Analysis

Internet Computer (ICP) - Blockchain