২৯ এপ্রিল ২০২০ এ পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গে
অনেক দিন ধরেই ইউটিউব, ফেসবুকে দেখছি ২৯ এপ্রিল ২০২০ এ মহাকাশ থেকে একটি এস্টেরয়েড পৃথিবীতে আছরে পড়বে, তাতে মানব অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে। ফেসবুক, ইউটিউবে চলছেই। নাসা নাকি ডিক্লিয়ার দিয়েই দিয়েছে, এটা নাকি পৃথিবীতে আছরে পড়বেই।
খুব টেনশনে পড়ে গেলাম। কিছু জানার আগেই এভাবে পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে। কিভাবে কি? যাক, পরে জিনিসটা নিয়ে একটু ঘাটাঘাটি করলাম। ঘাটাঘাটির পর যা জানলাম, তার জন্য আমি একটুকও প্রস্তুত ছিলাম না। তো, সেটাই লিখছি বিশদ ভাবে।
২৯ এপ্রিল ২০২০ এ যে এস্টেরয়েডটা পৃথিবীতে আঘাত হানার সম্ভাবনা আছে, সেটার নাম হচ্ছে 1998 OR2। এর ব্যাস ৪.১ কি.মি। মানে মাউন্ট এভারেস্টের অর্ধেক। এটি ৩২০০০ কি.মি (প্রতিঘন্টা) গতিতে এগিয়ে চলেছে। তো এটা যদি পৃথিবীতে আছরে পড়ে, তবে সমগ্র পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে এটাই স্বাভাবিক।
পারমেডিয়ান পিরিয়ডে ডাইনোসর বিলুপ্ত হয়েছিলো এই চিক্সিলুপ নামের একটি এস্টেরয়েড পৃথিবীতে পড়ার জন্য। এটি 1997 OR2 এর চেয়ে ছোট ছিলো। কিন্তু এরপরেও চিক্সিলুপ থেকে এত পরিমান শক্তি নির্গত হয়েছিলো, যার দ্বারা পৃথিবীকে ধ্বংস করে ফেলা সম্ভব ছিলো। আর 1997 OR2 এত বিশাল। এটি পৃথিবীতে আছরে পড়লে কি হতে পারে, সেটা ভাবতেই ভয় লাগছে। কিন্তু, সুখের ব্যাপার হচ্ছে এটা পৃথিবীতে আসবেই না। এটা পৃথিবীর চেয়ে ৬২,০০,০০০ কি.মি দূর দিয়ে যাবে। পৃথিবীতে আসার সম্ভাবনাই নেই। আর তাই দুশ্চিন্তার কোন কারন নেই।
দুশ্চিন্তা করতেই হয়, তবে Apophis নিয়ে ভাবুন। এটা ১০ এপ্রিল ২০২৯ এ পৃথিবীর খুব কাছ দিয়ে যাবে। মানে অভিকর্ষ বলয়ের ভেতর দিয়ে যাবে। এটা চাঁদের চেয়েও খুব নিকটে থাকবে। ২০০৪ সালে নাসা সর্বপ্রথম এটাকে ডিটেক্ট করে। তখন তাদের ক্যালকুলেশন এর ফলাফল ছিলো যে ২০২৯ এই এটি পৃথিবী অতিক্রম করে যাবে এবং খুব নিকট দিয়ে যাবে। মানে মাত্র ৩০,০০০ কিমি দূর থেকেই পৃথিবী অতিক্রম করবে। আর চাঁদের দূরত্ব পৃথিবী থেকে ৩,৮৪,৪০০ কিমি। অর্থাৎ, এটা চাঁদের চেয়েও নিকট দিয়ে যাবে। যার মানে পৃথিবীর সাথে এর সংঘর্ষ হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
একটা কথা বলে রাখা ভালো, এই এস্টেরয়েড এর পৃথিবীতে আছরে পড়ার সম্ভাবনা অনেক। Asteroid meter এর হিসেব অনুযায়ী কোন ভাবে যদি ২০১৯ এ Apophis কোন দুর্ঘটনা ছাড়া পৃথিবী অতিক্রম করে চলে যায়, তবে এর ৭ বছর পর মানে ২০৩৬ এ আবার পৃথিবী অতিক্রম করবে, এবং তখন আরো কাছ দিয়ে যাবে। যদি তখনো কোন দুর্ঘটনা না ঘটে, তবে এর আরো ৭ বছর পর মানে ২০৪৩ সালে আরো কাছ দিয়ে যাবে। মানে একবার না একবার এটার পৃথিবীতে পড়ার সম্ভাবনা আছেই। এটা প্রকৃতির জন্য অনেক বড় একটা হুমকি। জীব বৈচিত্র্যের জন্য বড় হুমকি। একটা গোটা আইফেল টাওয়ারের সমান এস্টেরয়েড পৃথিবীতে পড়লে কেমন হতে পারে, সেটা বুঝতেই পারছেন। এটা বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী হাইড্রোজেন বোমা Tsar bomba থেকেও ১০ গুণ শক্তিশালী! এই এস্টেরয়েড পৃথিবীতে আছরে পড়লে মানব জীবন চমর ভাবে বিপদগ্রস্ত হবে। বহু জীবকুল বিলুপ্ত হয়ে যাবে। পৃথিবীর তাপমাত্রা বহুলাংশে বেড়ে যাবে। ওজন স্তরের অস্তিত্ব থাকবে না, ফলে অতি ক্ষতিকারক কসমিক রে পৃথিবীতে আসবে। ফলে হয়তবা, মানুষ কোন ভাবে সার্ভাইব করে যাবে কিন্তু প্রাকৃতিক বিভিন্ন কারনে মানুষ মারা যাবে। মোট কথা জীবকুল চরম ভাবে বিপদগ্রস্ত হবে।
সবশেষে একটা কথাই বলবো, ২৯ এপ্রিল পৃথিবী ধ্বংস হবার কোন সম্ভাবনাই নেই। অযথা ভয় পাওয়ার ও কিছু নেই। ভয় পেতে হলে Apophis নিয়ে করুন। এর দ্বারা জীবকুল হুমকির সম্মুখীন হতে পারে।
আল্লাহ আমাদের এই আসন্ন বিপদ থেকে রক্ষা করুক। আমিন।
.
লেখাঃ Faaz
খুব টেনশনে পড়ে গেলাম। কিছু জানার আগেই এভাবে পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে। কিভাবে কি? যাক, পরে জিনিসটা নিয়ে একটু ঘাটাঘাটি করলাম। ঘাটাঘাটির পর যা জানলাম, তার জন্য আমি একটুকও প্রস্তুত ছিলাম না। তো, সেটাই লিখছি বিশদ ভাবে।
২৯ এপ্রিল ২০২০ এ যে এস্টেরয়েডটা পৃথিবীতে আঘাত হানার সম্ভাবনা আছে, সেটার নাম হচ্ছে 1998 OR2। এর ব্যাস ৪.১ কি.মি। মানে মাউন্ট এভারেস্টের অর্ধেক। এটি ৩২০০০ কি.মি (প্রতিঘন্টা) গতিতে এগিয়ে চলেছে। তো এটা যদি পৃথিবীতে আছরে পড়ে, তবে সমগ্র পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে এটাই স্বাভাবিক।
পারমেডিয়ান পিরিয়ডে ডাইনোসর বিলুপ্ত হয়েছিলো এই চিক্সিলুপ নামের একটি এস্টেরয়েড পৃথিবীতে পড়ার জন্য। এটি 1997 OR2 এর চেয়ে ছোট ছিলো। কিন্তু এরপরেও চিক্সিলুপ থেকে এত পরিমান শক্তি নির্গত হয়েছিলো, যার দ্বারা পৃথিবীকে ধ্বংস করে ফেলা সম্ভব ছিলো। আর 1997 OR2 এত বিশাল। এটি পৃথিবীতে আছরে পড়লে কি হতে পারে, সেটা ভাবতেই ভয় লাগছে। কিন্তু, সুখের ব্যাপার হচ্ছে এটা পৃথিবীতে আসবেই না। এটা পৃথিবীর চেয়ে ৬২,০০,০০০ কি.মি দূর দিয়ে যাবে। পৃথিবীতে আসার সম্ভাবনাই নেই। আর তাই দুশ্চিন্তার কোন কারন নেই।
দুশ্চিন্তা করতেই হয়, তবে Apophis নিয়ে ভাবুন। এটা ১০ এপ্রিল ২০২৯ এ পৃথিবীর খুব কাছ দিয়ে যাবে। মানে অভিকর্ষ বলয়ের ভেতর দিয়ে যাবে। এটা চাঁদের চেয়েও খুব নিকটে থাকবে। ২০০৪ সালে নাসা সর্বপ্রথম এটাকে ডিটেক্ট করে। তখন তাদের ক্যালকুলেশন এর ফলাফল ছিলো যে ২০২৯ এই এটি পৃথিবী অতিক্রম করে যাবে এবং খুব নিকট দিয়ে যাবে। মানে মাত্র ৩০,০০০ কিমি দূর থেকেই পৃথিবী অতিক্রম করবে। আর চাঁদের দূরত্ব পৃথিবী থেকে ৩,৮৪,৪০০ কিমি। অর্থাৎ, এটা চাঁদের চেয়েও নিকট দিয়ে যাবে। যার মানে পৃথিবীর সাথে এর সংঘর্ষ হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
একটা কথা বলে রাখা ভালো, এই এস্টেরয়েড এর পৃথিবীতে আছরে পড়ার সম্ভাবনা অনেক। Asteroid meter এর হিসেব অনুযায়ী কোন ভাবে যদি ২০১৯ এ Apophis কোন দুর্ঘটনা ছাড়া পৃথিবী অতিক্রম করে চলে যায়, তবে এর ৭ বছর পর মানে ২০৩৬ এ আবার পৃথিবী অতিক্রম করবে, এবং তখন আরো কাছ দিয়ে যাবে। যদি তখনো কোন দুর্ঘটনা না ঘটে, তবে এর আরো ৭ বছর পর মানে ২০৪৩ সালে আরো কাছ দিয়ে যাবে। মানে একবার না একবার এটার পৃথিবীতে পড়ার সম্ভাবনা আছেই। এটা প্রকৃতির জন্য অনেক বড় একটা হুমকি। জীব বৈচিত্র্যের জন্য বড় হুমকি। একটা গোটা আইফেল টাওয়ারের সমান এস্টেরয়েড পৃথিবীতে পড়লে কেমন হতে পারে, সেটা বুঝতেই পারছেন। এটা বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী হাইড্রোজেন বোমা Tsar bomba থেকেও ১০ গুণ শক্তিশালী! এই এস্টেরয়েড পৃথিবীতে আছরে পড়লে মানব জীবন চমর ভাবে বিপদগ্রস্ত হবে। বহু জীবকুল বিলুপ্ত হয়ে যাবে। পৃথিবীর তাপমাত্রা বহুলাংশে বেড়ে যাবে। ওজন স্তরের অস্তিত্ব থাকবে না, ফলে অতি ক্ষতিকারক কসমিক রে পৃথিবীতে আসবে। ফলে হয়তবা, মানুষ কোন ভাবে সার্ভাইব করে যাবে কিন্তু প্রাকৃতিক বিভিন্ন কারনে মানুষ মারা যাবে। মোট কথা জীবকুল চরম ভাবে বিপদগ্রস্ত হবে।
সবশেষে একটা কথাই বলবো, ২৯ এপ্রিল পৃথিবী ধ্বংস হবার কোন সম্ভাবনাই নেই। অযথা ভয় পাওয়ার ও কিছু নেই। ভয় পেতে হলে Apophis নিয়ে করুন। এর দ্বারা জীবকুল হুমকির সম্মুখীন হতে পারে।
আল্লাহ আমাদের এই আসন্ন বিপদ থেকে রক্ষা করুক। আমিন।
.
লেখাঃ Faaz
Comments
Post a Comment