সূচীর পতন ও আমাদের লাভ-ক্ষতি

 রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়ে আলোচনা শুরুর কয়েক মাসের মাঝে সুচি সরকার সামরিক জান্তার গ্যারাকলে পড়লো! যারা সূচির গ্রেফতারে খুশি হয়ে বাহবা দিচ্ছেন, তাদের বলি, লাভ খুব একটা হয় নাই।

মায়ানমার আজীবন চীনের গোলাম। আর এবারও চীনের ইন্ধোনেই সেই অভ্যুত্থান। চীনের মধ্যস্ততায়ই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল, আবার চীনের ইন্ধনে মায়ায়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সূচির পতন। আর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বাধাগ্রস্ত! বন্ধই বলতে পারেন।

সীমান্তে কঠোর অবস্থানে বিজিবি! কেমন হবে? যদি মায়ানমারের সাধারণ মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে সরাতে মায়ানমার সেনাবাহিনী চীনের ইন্ধনে বাংলাদেশ সীমান্তে হামলা করে? এতে কিন্তু লাভ চীনেরই। কারন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সম্পূর্ণ চীনের আদলে সাজানো, অপরদিকে মায়ানমার সেনাবাহিনীও চীনের আদলে সাজানো। চীনের অস্ত্র ব্যাবসা কিন্তু ভালোই জমবে।


তাই, এবার বাংলাদেশের উচিত হবে পশ্চিমা দেশ গুলোর সাথে আলোচনা করে মায়ানমারের উপর বড় ধরনের অর্থনৈতিক স্যাংশন আরোপে চাপ দেয়া। চীন নির্ভরতা কমিয়ে পশ্চিমা দেশ গুলোর সাথে সখ্যতা বৃদ্ধি করা। বিশেষত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এই মায়ানমারের পরিস্থিতিতে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র ক্রয়ের আলোচনা করে তাদের সমরাস্ত্র কম মূল্যে বিক্রি করাতে রাজি করানো।

যুদ্ধ হলে বাংলাদেশ জিতবে এটা নিশ্চিত। কারন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী হচ্ছে বিশ্ব সেরা প্রশিক্ষিত সেনাবাহিনীর একটি। তবে যে ক্ষতি হবে সেটা পুষিয়ে নিতে আমাদের দেশের জন্য অনেক কঠিন হবে। যেখানে অলরেডি দুর্নীতিতে আরো দুই ধাপ অবনতি হয়েছে। আর করোনার ভয়াবহ পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া রিলিফ গুলোকে চোরের দল কিভাবে লুটেছিল, তা আমরা সবাই দেখেছি। 

অনেকেই বলবে, এক সামরিক অভ্যুত্থানে এতো গবেষণা! - আমি বলবো, ভাই এটা সম্পূর্ণ আন্তর্জাতিক রাজনীতি। আর কিছু না।

আর, আমি একবারও বলিনি যুদ্ধ হবে। আমি একবারও বলিনি সীমান্ত সংঘাত হবে। তবে হতে পারে। অনেক কিছুই হতে পারে। চীনের ইন্ধনে অনেক কিছুই হচ্ছে এবং হবে। আর এর আগে বহুবার মায়ানমার আমাদের উষ্কানি দিয়েছে যুদ্ধের জন্য। বহুবার আকাশ সীমা লঙ্ঘন করে উষ্কানি দিয়েছে। 

একটা ব্যাপার কিন্তু লক্ষনীয়, আমরা কিন্তু না চাইতেও একটু বেশিই চীন নির্ভর হয়ে পড়ছি। যা ভবিষ্যতে সুফল বয়ে আনবে না। তবে একটা ব্যাপার মানতেই হবে, এই সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে একটা ব্যাপার স্পষ্ট, সেটা হচ্ছে মায়ানমার কত বড় চীনের দালাল। আর এই দালালদের হাত করতে এবং বাংলাদেশকে কাউন্টার করতে ভারতীয় দাদারা যে সাবমেরিন দিয়েছিলো, সেই দাদাদের মুখেই কাদা লেপ্টে দিয়ে মায়ানমার আবারও স্পষ্ট জানান দিলো, তারা চীনের ব্লকে এবং আজীবন চীনেরই দালালি করবে। এইরুপ বেঈমানী দেখে আমার ভারতীয় দাদাদের প্রতি করুনা হচ্ছে। বেচারা সব দিক দিয়েই বাঁশ খাচ্ছে। ট্রাম্প কাক্কুর বিদায়, ইরানের সাথে সম্পর্কের অবনতি, লাদাখের বিশাল এরিয়া দখল, অরুনাচল হারানোর আশঙ্কা এমন হাজারো সমস্যায় জর্জরিত তারা। S-400 ইস্যুতে আবার আমেরিকার স্যাংশনও খাইতে পারে। এতোসব ঝামেলার পরেও তারা আসছিলো বাংলাদেশকে কাউন্টার করতে! 

তবে হ্যা, এক অপদার্থ শাসকের পতন হওয়াটা মন্দের ভালো। সূচী আজীবন মিয়ানমার সেনাবাহিনীর খেলার পাত্রী ছিলেন। সামনেও হয়তো থাকবেন। নয়তো ঐ বর্বর গণহত্যায় সূচীর উচিত ছিলো মানবতার পক্ষে থাকা, বর্বর সেনাবাহিনীর পক্ষে না। 


দেখা যাক সামনের দিন গুলোতে কি হয়।

Comments

Popular posts from this blog

DevSecOps - Beginners guide

The Cloud Is More Vulnerable Than You Think

DSA